উত্তর→
পরিচয়→মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের 'কে বাঁচায় , কে বাঁচে ' গল্পে নিখিল ছিল কেন্দ্রীয় চরিত্র মৃত্যুঞ্জয়ের সহকর্মী ও বন্ধু । রােগা , তীক্ষ্ণবুদ্ধি সম্পন্ন এবং অলস প্রকৃতির নিখিল সংসারের প্রতি অমনােযােগী । দুই সন্তানের পিতা নিখিল বই পড়ে ও নিজের চিন্তাজগৎ তৈরি করে অবসর জীবন যাপন করতে চেয়েছে ।
প্রায় সমপদস্থ নিখিল মৃত্যুঞ্জয়কে শুধুমাত্র নিরীহ বা শান্ত মানসিকতার জন্য পছন্দ করত না , তার সততা , আদর্শবাদ নিখিলকে আকৃষ্ট করত । মৃত্যুঞ্জয় চরিত্র প্রকাশে প্রধান ভূমিকা মূলত নিখিলের । যুক্তিপ্রিয় নিখিল স্বার্থপর নয় , সে তিন জায়গায় অর্থসাহায্য পাঠাত ।
বন্ধুবৎসল→ কাহিনি অনুসারে বােঝা যায় নিখিল অত্যন্ত বন্ধুবৎসল । মৃত্যুঞ্জয়ের আবেগতাড়িত মন সমাজের বাস্তবরূপ উপলব্ধি না করতে পারলেও নিখিল জানে রিলিফ মানে আসলে একজনের বদলে আর একজনকে খাওয়ানাে নয় । তাই সে মৃত্যুঞ্জয়কে বারবার প্রতিহত করার চেষ্টা করেছে । নানাভাবে মৃত্যুঞ্জয় ও তার পরিবারের পাশে থেকেছে নিখিল । এতে তার চরিত্রের আন্তরিকতা ও মানবিক দিক প্রকাশিত হয়েছে ।
বস্তুববাদী→ নিখিল আবেগ - অনুভূতিহীন মানুষ নয় । সে জানে মৃত্যুঞ্জয়ের পারিবারিক অবস্থা , বন্ধুপত্নীর স্বাস্থ্যসংকট । বন্ধুর উদ্যমে বাধা না দিয়ে সে তাই সহমর্মী হয়ে মৃত্যুঞ্জয়কে বাস্তবতা বােঝাতে চেয়েছে । সে জানে এই বিপুল অবক্ষয়ের স্রোত থেকে ব্যক্তিমানুষের একক উদ্যোগ কখনও সমাজকে বাঁচাতে পারে না । তার সকল যুক্তি , বুদ্ধি দিয়ে সে মৃত্যুঞ্জয়কে মূলস্রোতে ফেরাতে চেয়েছে । বাস্তববাদী নিখিল ব্যর্থতা জেনেও মৃত্যুঞ্জয়ের সঙ্গ ছাড়েনি ।
পরিশেষে বলা চলে নিখিল একজন হৃদয়বান মানুষ । যার মঙ্গলবাধ বন্ধু নয় , তার পরিবারের শুভ চিন্তাতেও উৎসর্গীকৃত । বাস্তববাদী , বন্ধুর শুভার্থী নিখিলের এই চরিত্রধর্মই লেখক গল্পে তুলে ধরেছেন ।