প্রশ্ন:-
'পড়তে জানে এমন এক মজুরের প্রশ্ন' কবিতায় কে, কাকে প্রশ্ন করেছেন, তার প্রশ্ন করার কারণ কী তা তুমি আলােচনা করাে।
1+4=5
উত্তর:-
→ কবি বের্টোল্ট ব্রেখট রচিত 'পড়তে জানে এমন এক মজুরের প্রশ্ন’ নামক কবিতায় শ্রমজীবী শ্রেণির প্রতিনিধি জনৈক সাক্ষর মজুর প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়েছে শুভ বুদ্ধিসম্পন্ন মানুষের প্রতি তথা সভ্য সমাজের প্রতি।
● ইতিহাসের পাতায় পাতায় লেখা আছে রাজা - বাদশাদের দিগবিজয়ের মহান কীর্তিকাহিনি। প্রাচীনকাল থেকে ধারাবাহিকভাবে সেই ইতিহাসে লেখা হয়েছে থিবস্, ব্যাবিলনের ঝুলন্ত উদান, বাইজেনটিয়াম, লিমা, চিনের প্রাচীর গড়ে তােলার ক্ষেত্রে রাষ্ট্রনায়কদের ভূমিকা। অথচ, রাজারা তাে ঘাড়ে করে পাথর বইত না। যুগ যুগ ধরে খেটে খাওয়া, হতদরিদ্র মানুষের দল অক্লান্ত, অমানুষিক পরিশ্রম করে পৃথিবী জুড়ে সৃষ্টি করেছিল আশ্চর্য বিস্ময়। কিন্তু ইতিহাসে তার কোনাে উল্লেখই নেই। দিগ্বিজয়ী সম্রাট কি একাই যুদ্ধে জিতেছিলেন, আর্মাডা ডুবে যাওয়ার দুঃখ কি কেবল রাজার, দ্বিতীয় ফ্রেডারিক কি একাই ধর্মযােদ্ধা? এইসব প্রশ্ন কবিতার মাঝে বারেবারে ফিরে এসেছে, উত্তর খোঁজার কিংবা প্রত্যুত্তরের দায়িত্ব তুলে দেওয়া হয়েছে সমাজের প্রতি দায়বদ্ধ মানুষদের উপর।
যুগে যুগে মানবসভ্যতা অগ্রগতির বিজয়শকট টেনে নিয়ে চলে শ্রমিক শ্রেণি। আশ্চর্যের কথা, তারা কখনাে ইতিহাসের পাতায় ঠাই পায়নি। সুসভ্য, শিক্ষিত নাগরিক জীবন শ্রমিকদের জন্য কোনাে সম্মান নেই । সমাজের সব গুরু দায়িত্ব বহন করা সত্ত্বেও শ্রমজীবীরা অধিকারহীন। তাই বঞ্চিত, ক্ষুদ্ধ, পদদলিত শ্রমিকশ্রেণির প্রতিনিধি 'পড়তে জানা মজুর' সমাজের শুভ চেতনার উন্মেষ ঘটাতে এবং নিজেদের প্রাপ্য মর্যাদার আশায় সমাজের কাছে প্রশ্নগুলি তুলেছে।